মো:জামাল উদ্দিন জাহেদ চট্টগ্রাম:দেশের দক্ষিণ-অঞ্চলের যোগাযোগমাধ্যম চট্টগ্রাম-বাঁশখালী মহাসড়ক বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। পর্যটন নগর বাঁশখালীতে সারা বছরই এই পথে যাওয়া-আসা করেন পর্যটকরা।
কিন্তু গাড়ির তুলনায় মহাসড়কটি প্রশস্তকরণ কাজে ধীরগতি এবং নৌপথে পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় সড়কপথে ট্রাকে লবণ পরিবহন করতে গিয়ে সড়কটি তৈরি হয়েছে মৃত্যুফাঁদে।
এই মহাসড়কের পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা জানান, ৭০টি বিপজ্জনক বাঁকে বেশি ঘটছে দুর্ঘটনা।সড়কের তুলনায় গাড়ি ও যাত্রীর সংখ্যা ৪ গুণ বেশি। আছে বেপরোয়া গতি।
সরু ব্রিজ ও বিভিন্ন এলাকায় সড়কের পাশে হাট-বাজার বসার ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতিদিন ৫ শতাধিক বৈধ এসি-নন এসি বাস ও লোকাল বাস, ৫শ ট্রাক-পিকআপ চলাচল করে।
এছাড়া, চার চাকার ট্রলি, ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা, গাড়ি চলে ২ হাজার। এর মধ্যে খোলা ট্রাকে লবণ পরিবহন করার ফলে লবণের পানিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই।
কক্সবাজার জেলার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, মহেশখালী, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও চকরিয়া এবং বাঁশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় লবণের চাষ হয়। নৌ ও স্থলপথে এসব লবণ ঢাকা, নোয়াখালী, ঝালকাঠি, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা লবণ পরিশোধনাগারে পাঠানো হয়। সড়কপথে ট্রাকে লবণ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট, লবণশিল্প এলাকায় আনা-নেওয়ার খরচ কম হওয়ায় বেশিরভাগ লবণ রাজাখালী আনা হয়।
নিয়মানুযায়ী, লবণবাহী ট্রাকে জিইওট্যাক্স (মোটা ত্রিপল) ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু তা না করায় পুরো রাস্তায় লবণের পানি ঝরে পড়ে। এছাড়া পরিবহনের সময় কাঁচা মাটির সড়কে আঠালো আস্তরণ সৃষ্টি হয়। ফলে চলমান গাড়ি ব্রেক কষলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর এতেই ঘটে দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, নির্দিষ্ট মৌসুমে চট্টগ্রাম-বাঁশখালী মহাসড়ক হয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ভর্তি করে লবণ পরিবহন করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে লবণ পরিবহনে ট্রাকে পলিথিন ব্যবহারের কথা বলা হলেও লবণ ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। কেউ পলিথিন ব্যবহার করলেও ইন্দ্রপুল এলাকায় সড়কের ওপর ট্রাক থেকে পরিশোধনাগারে লবণ পরিবহন করার সময় লবণাক্ত পানিতে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। লবণ পানি পড়ে মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। খোলা লবণ পরিবহন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও রাত থেকে ভোর পর্যন্ত খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহনের কারণে এই মহাসড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ঘটছে প্রাণহানিও।
বাঁশখালীর ওসি তোফায়েল আহমেদ, বলেন, লবণবাহী ট্রাকের ওপরে-নিচে মোটা ত্রিপল ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ সেটি অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।